২২ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২৩ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

সপ্তাহজুড়ে চলবে ‘পর্যটক উৎসব’

পুরনো বছরকে বিদায় ও নববর্ষকে স্বাগত জানাতে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস নামবে সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে। আজ ২৩ ডিসেম্বর থেকে আগামী পহেলা জানুয়ারি পর্যন্ত কক্সবাজারে বইয়ে যাবে পর্যটকের এক ‘উৎসব’। এই উচ্ছ্বাসের সঙ্গী হতে এরই মধ্যে কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন লক্ষাধিক পর্যটক। আরো বিপুল পরিমাণ পর্যটক আসার পথে রয়েছে। এই ‘পর্যটক উৎসব’কে ঘিরে অপরূপভাবে সেজে উঠেছে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার। হোটেল-মোটেলসহ সব ধরণের পর্যটন ব্যবসা নতুনভাবে সেজে উঠেছে। বর্ষবিদায় এবং বর্ষবরণের উৎসবকে রাঙিয়ে তুলতে ৩০ ডিসেম্বর থেকে পহেলা জানুয়ারি পর্যন্ত সৈকতে বসছে বীচকার্ণিভাল। এই কার্ণিভাল পুরো উৎসবকে অন্যন্য মাত্রা দেবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা। পর্যটকের নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে মহান বিজয় দিবসের আগ থেকেই কক্সবাজারের বিপুল পর্যটক এসেছেন। থার্টি ফাস্টনাইট ও নতুন বছর ২০১৭ সালকে স্বাগত জানাতে পর্যটকেরা কক্সবাজারে ছুটে আসছেন। আজ শুক্রবার থেকে টানা তিনদিনের ছুটিকে সামনে রেখে পর্যটকেরা ছুটে আসছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যে অন্তত ৫লাখ পর্যটক সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পহেলার জানুয়ারি পর্যন্ত এ পরিমাণ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করবেন।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, এবারের থার্টিফাস্টনাইট ও বর্ষবরণে কক্সবাজারের প্রতি পর্যটকেরা বিপুল সাড়া দিয়েছেন। যা বিগত বছরকে হার মানাবে। সাড়া দেয়া পর্যটকেরা ডিসেম্বরের শুরু থেকেই হোটেল বুকিং দেয়া শুরু করেন। প্রথম সপ্তাহেই কক্সবাজারের ৭০ ভাগ হোটেল বুকিং হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তিনশতাধিক হোটেল ও দু’শতাধিক পর্যন্ত অন্তত ৯৫ ভাগ হোটেল বুকিং হয়ে রয়েছে।
তারকামানের হোটেল ওশান প্যারাডাইসের চেয়ারম্যান নুরুল করিম জানিয়েছেন, ২৫ ডিসে¤র থেকে আর কোন কক্ষ খালি নেই। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের বুকিং আছে। ইনানীর রয়েল টিউলিপ, কক্স টুডে, লংবীচ, সী-গালসহ সব তারকা মানের হোটেলের চিত্র একই। বর্ষবিদায় এবং বরণে আগত পর্যটকসহ কক্সবাজারের মানুষের বিনোদনের জন্য এইসব তারকা মানের হোটেল গুলোতে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে ৩০ ডিসেম্বর থেকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে বসছে বিশাল কার্ণিভাল। তিন ব্যাপী এই কার্ণিভাল বিরাট আকারে আয়োজিত হবে। কার্ণিভালের দেশের নামকরা বেশ কয়েকজন শিল্পী গান পরিবেশন করবেন। টিভির পর্দায় অনুষ্ঠানগুলো লাইভ দেখানো হবে। মূলত কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন জোগাতে এই কার্ণিভালের আয়োজন করা হয়েছে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
ট্যুর অপারেটরস অব কক্সবাজার’র (টুয়াক) সাবেক সভাপতি এস.এম কিবরিয়া জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কক্সবাজালে লক্ষাধিক পর্যটক এসে গেছেন। আরো বিপুল পরিমাণ পর্যটক আসার পথে রয়েছে। আজকের মধ্যে অন্তত তিন লাখ পর্যটক সমাগম হবে। থার্টিফাস্টনাইট ও নববর্ষ বরণের প্রাক্কালে আরো বেশ পরিমাণ পর্যটক আসবে। সব মিলে পাঁচ লাখ পর্যটক সমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে সমুদ্র সৈকত, ইনানী, হিমছড়ি, সেন্টমার্টিনসহ কক্সবাজারের সব পর্যটন স্পট এবং পিকনিক স্পট ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। আগত পর্যটকরা নিজেদের ভ্রমনকে আনন্দদায়ক ও ছুটে চলেছেন বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। বিকাল থেকে সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী বীচ পর্যন্ত পর্যটকের বিপুল উপস্থিতি দেখা গেছে।
কক্সবাজারে সমাগত বিপুল পর্যটকের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কোনো পর্যটক যাতে কোনো ধরণের নিরাপত্তা ঘাটতি না পড়ে তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকতসহ সব পর্যটন স্পট ছাড়াও পর্যটন বিচরণকারী অন্যান্য স্থানে নিরাপত্তা জোরদার থাকবে।
সৈকতে পর্যটকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রৈবি লাইফ গার্ডের ইনচার্জ ছৈয়দ নুর বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। সৈকতের সী ক্রাউন, সী ইন, সী গাল, লাবণী, শৈবাল ও ডায়াবেটিক সহ সব পয়েন্টে ‘লাইফ গার্ড’ কর্মীরা রয়েছে। তারা প্রতি মুহুর্তে পর্যটকের সেবায় কাজ করছে। রবি লাইফগার্ড ছাড়াও আরো তিনটি লাইফগার্ড বাহিনী পানিতে নামা পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, ‘সৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটকের নিরাপত্তায় ট্যুরিষ্ট পুলিশের শতভাগ প্রস্তুতি রয়েছে। দর্শনীয় স্থান ও বিপণিকেন্দ্র গুলোতেও পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকত, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়া নগরসহ ৭টি পর্যটন স্পটে কাজ করছে ট্যুরিষ্ট পুলিশ। বাড়তি পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিষ্ট পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যসহ যাবতীয় সরঞ্জাম বাড়ানো হয়েছে।’ এছাড়াও জেলা পুলিশও পর্যটকের নিরাপত্তায় থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।
রায়হান কাজেমী বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তায় কোন ঘাটতি থাকবে না। তবে আগত পর্যটকদেরও সতর্কভাবে চলাফেরা করতে হবে। বৈরী পরিবেশ ও ভাটার সময় যেন পর্যটকেরা সাগরে নামা যাবে না। এছাড়া যে কোনো অঘটন থেকে সাবধান থাকতে হবে।’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।