যারা বনে খেতে যান তারা তাদের আয়োজনের নাম থাকে ‘বনভোজন’! আর যারা শিক্ষার উদ্দেশ্যে খেতে বের হন তাদের আয়োজনের নাম হয় ‘শিক্ষা সফর’! কিন্তু আমরা তো গেলাম সমুদ্রপাড়ে। তাই আমাদের আয়োজনের নাম দিয়েছি ‘সমুদ্রভোজন’! বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের (বিওজেএ) কক্সবাজার জেলা শাখার বন্ধুরা মঙ্গলবার সারাটা দিন তাই সমুদ্রপাড়েই কাটিয়েছেন। ভোজনটা সমুদ্রপাড়ে হলেও আয়োজনটা ছিল ‘দরিয়ানগর কবিতা চত্বরে’। আর এই আয়োজনে শুধুই যে অনলাইন সাংবাদিকরাই ছিলেন তা নয়, ছিলেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিথযশা সাংবাদিকরাও। এই আয়োজনে ছিলেন আমাদের পৌর পিতা সরওয়ার কামালও!
সকালের সূর্যালোক উদয় হওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয় পিকনিকের ‘মহাযজ্ঞ’। পিকনিক নামের গতানুগতিকার বাইরে গিয়ে ভিন্ন ইভেন্ট নিয়ে প্রাণবন্ত হয়ে পুরো আয়োজন। সেই আয়োজনে ছিল সমুদ্রের বালিয়াড়িতে প্রীতি ফুটবল, অতিথি হয়ে আসা সুধীজনদের শুভকামনার সংক্ষিপ্ত আলোচনা আর সাংবাদিকতা জীবন নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের নিজেদের পর্যালোচনামূলক আলোচনা ‘সাংবাদিকতা ঃ কেন আসলাম, কিভাবে আসলাম’! সাথে আবার নতুনত্বে ভরা র্যাফল ড্র’র আয়োজন। ‘সাধের লাউ’, ‘ফুলকপি’ আর ‘বেগুনে’র মতো উপহারও ছিল সেই ড্র’তে! প্রথম পুরস্কারটি ছিল আবার সেই গতানুগতিক।
কারা ছিলেন এই আয়োজনে
অতিথি হয়ে এসেছিলেন কক্সবাজার পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সাধারণ সম্পাদক জিএএম আশেক উল্লাহ, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, কক্সবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি আকতার চৌধুরী, কক্সবাজার সম্পাদক পরিষদের সদস্য সচিব ও দৈনিক সমুদ্র কণ্ঠ সম্পাদক মঈনুল হাসান পলাশ, মুরব্বি সাংবাদিক নুরুল ইসলাম হেলালী, দৈনিক হিমছড়ির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাসানুর রশীদ ও দৈনিক সাগর দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা সরওয়ার।
দুপুরের আগে রান্না পর্ব শেষে মূল প্রোগাম শুরু হয়। নামাজের পর দু’পক্ষের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় ফুটবল প্রীতি ম্যাচ। কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টাল খবর বিতান ডটকম সম্পাদক মোহাম্মদ হাশিম ও চ্যানেল নাইনের জেলা প্রতিনিধি জাবেদ ইকবাল চৌধুরীর অধিনায়কত্বে অনুষ্ঠিত ওই ফুটবল ম্যাচে দুই-শূণ্য গোলে জয়ী হয় জাবেদ ইকবালের দল। ম্যাচ শেষে খাওয়ার পর্ব সারা হয়। এরপর অতিথিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় মূল আলোচনা সভা।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘অনলাইন সাংবাদিকতা আজ সময়ের সাথে এগিয়ে চলেছে। এই সময়ে অনলাইন সাংবাদিকতাকে কোনভাবেই অবহেলার কোন উপায় নেই। বিশ্ব আর সময়ের সাথে এগিয়ে যেতে হলে অবশ্যই অনলাইন আর অনলাইন সাংবাদিকতার সাথে থাকতে হবে। এতে করে উন্নয়নধারা প্রবাহিত হবে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘অনলাইন সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের পিকনিক নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। কেননা এই পিকনিক জেলার সকল মতের সাংবাদিকদের এক মোহনায় অংশীদার করতে পেরেছে।’
তারা মনে করেন, ‘ভবিষ্যতেও এরকম পিকনিকসহ বিভিন্ন ইভেন্ট চালু রেখে সাংবাদিকদের ঐক্য ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকবে।’
এছাড়াও সুষ্ঠু ও বিশ্বমানের সাংবাদিকতার মাধ্যমে কক্সবাজারকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে হবে বলেও মনে করেন তারা।
এই আয়োজনে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনায় ছিলেন বাংলাদেশ জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আনছার হোসেন, সহ-সভাপতি আবদুর রহমান, সহ-সভাপতি সরওয়ার আলম, সহ-সভাপতি গোলাম আজম খান, সাধারণ সম্পাদক ইমাম খাইর ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইসলাম মাহমুদ ।
পিকনিকের অতিথি ও অংশগ্রহণকারিদের মধ্যে কক্সবাজারের ব্যতিক্রমধর্মী অনলাইন পোর্টাল কক্সবাজার টাইমস ডটনেটের পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার দেয়া হয়।
‘সমুদ্রভোজনে’র এই আয়োজনে আরও যারা সারথী হয়েছিলেন তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন চকরিয়া উপজেলা সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা সভাপতি আজাদ মনসুর, উখিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক শফিক আজাদ, রামু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আহমদ ছৈয়দ ফরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আবু বকর ছিদ্দিক।
আরও ছিলেন দৈনিক হিমছড়ির বিশেষ প্রতিবেদক ও কক্সবাজার সময় ডটকম সম্পাদক এএইচ সেলিম উল্লাহ, খবর বিতান ডটকমের বার্তা সম্পাদক আব্দুল্লাহ নয়ন, দৈনিক হিমছড়ির স্টাফ রিপোর্টার কাইছারুল ইসলাম, ডেইলি ট্যুরিষ্টের বার্তা সম্পাদক মোঃ বিন আব্দুল্লাহ, কক্সবাজার টাইমস ডটনেটের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবুল মঞ্জুর আলম, চীফ রিপোর্টার শাহেদ ইমরান মিজান, সমুদ্রকন্ঠের স্টাফ রিপোর্টার ছৈয়দ আলম ও একুশে কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি আরোজ ফারুকসহ অর্ধশতাধিক সংবাদ কর্মী।
শেষ বেলায় এসে অতিথিরা আশা করেন, সাংবাদিকদের মাঝে ব্যক্তিগত মতাদর্শ থাকতে পারে, কিন্তু পেশাগত ভাবে তাদের মাঝে যেন কোন বিভেদ না থাকে। ‘সমুদ্রভোজনে’র মতো এমন আয়োজন সবধরণের মতভেদকে দূরে ঠেলে সাংবাদিকদের মাঝে ঐক্য ও সৌহার্দ্য গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।