কক্সবাজারের কলাতলী বাইপাস সড়কে পুলিশ লাইনের পাশে চিহ্নিত একটি ভূমিদস্যূ চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি ওই স্থানে পাহাড় ও পাহাড়ী পানি চলাচলের নালা দখল করে বহুতল ভবন ও টিনশেড কলোনী তৈরী করে দখল অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি চক্রটি আরও বেপরোয়া হয়ে পাহাড় ও নালায় রোহিঙ্গা পল্লী তৈরীর পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসি, প্রশাসন জানিয়েছে, আদালত পাড়ার সাবেক মুন্সী রফিকুল ইসলাম ও খাইরুল আমিন নামের ২ প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে চলছে এই অপকর্ম।
কক্সবাজার কলাতলী বাইপাস সড়কের পুলিশ লাইনের পশ্চিম ও দক্ষিণে ভূসিদস্যূদের এমন তৎপরতা দেখা গেছে। পুলিশ লাইনের পেছনের দক্ষিনের সীমানা প্রচীর ঘেঁষে সরকারি টিলা কেটে ইতিমধ্যে একটি চার তলা ভবন নিমার্ণ শেষ হয়েছে। ভবনটির দেয়ালের আস্তর এখনও দেয়া হয়নি। সেই ভবনের পূর্ব পাশে ইটের দালান ও টিন শেড কলোনী রয়েছে রফিক চক্রের। একই ব্যাক্তি পুলিশ লাইনের পশ্চিমের দেয়াল ঘেঁষে রাস্তার ধারে নালা দখল করে তৈরি করেছে টিন শেড কয়েকটি ঘর ও ভবন। নালা দখল করে তৈরী করা অবৈধ স্থাপনায় সাইন বোর্ড দিয়ে ঘোষণা দেয়া হয়েছে দখলদারের নাম। যেখানে এই দখলটি নিজের মালিকানা বলে দাবি করেছে রফিকুল ইসলাম নামের এই ব্যক্তি।
এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, গত এক যুগ ধরে রফিকুল ইসলাম একটি নিজস্ব বাহিনী তৈরী করে এই দখল অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন সময় প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগ দফায় দফায় উচ্ছেদ অভিযান ও মামলা করলেও তা বন্ধ করা যায়নি। এর মধ্যে টিন শেড কলোনী, নালা দখল করে তৈরী হওয়া ঘরে রোহিঙ্গাদের এনে বসবাস করানো হচ্ছে। সম্প্রতি নতুন করে মাটি কেটে রোহিঙ্গা পল্লী স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছেন এই রফিকুল ইসলাম ও খাইরুল আমিন।
ওই এলাকার লোকজন জানান, রফিকুল ইসলাম কক্সবাজারের আলোচিত একজন ভূমিদস্যূ। যার নেতৃত্বে কক্সবাজার সরকারি কলেজের পেছনের বিশাল পাহাড় দখল ও কেটে বিক্রি, বাঁকখালী নদীর তীর দখল, বালিকা মাদ্রাসার পাশের ঝাউবাগান দখল করে বিক্রির ঘটনায়ও মামলা রয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশ লাইনের পশ্চিম ও দক্ষিণের পাহাড় দখল করে রোহিঙ্গা এনে তা বিক্রি করার চেষ্টা করছে ওই ব্যাক্তি।
সম্প্রতি দখলের খবর পেয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে পুলিশ ও ভূমি অফিস ঘটনাস্থলে যান। এই সময় টিন শেড কলোনীটি বন্ধ করে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নিদের্শ দেয়া হয়। কিন্তু তা অমান্য করে নতুন করে পাহাড় কেটে দখল অব্যাহত রাখা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, পাহাড়ের ভবনটি ৭ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে নেয়ার নিদের্শ দেয়া হয়েছে। অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নতুন করে দখলের খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল দখল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতাও পেয়েছে। এব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানায় মামলাও দায়ের করেছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।