চলতি সপ্তাহের মধ্যে সাক্ষাতের শিডিউল না পেলে নির্বাচন কমিশন গঠনে দলীয় প্রস্তাবাবলী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে বিকল্পপথে প্রেরণ করবে বিএনপি। প্রস্তাবের প্রকাশিত কপি ডাকে অথবা দলীয় একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে গিয়ে পৌঁছে দেবে। রবিবার রাতে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে বৈঠকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
সূত্র জানায়, রবিবার দিবাগত রাতেই এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ নিয়ে ইসি গঠনের প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছাতে দু’বার চেষ্টা করেছে বিএনপি। গত ২০ নভেম্বর খালেদা জিয়ার প্রস্তাব জানাতে রাষ্ট্রপতির একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারকে ফোন করে সময় চেয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর ২৩ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সময় চাওয়া হবে। এদিনই বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল মহাসচিবের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বঙ্গভবনে পৌঁছে দেন।
সূত্রের দাবি, চলতি সপ্তাহের মধ্যে বঙ্গভবনের সাড়া না পেলে ডাকে বা সরাসরি প্রতিনিধি দল বিএনপির লিখিত প্রস্তাবনাটি রাষ্ট্রপতিকে পাঠাবে। এক্ষেত্রে বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা যেকোনও মূল্যে রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন। ইতোমধ্যে দলের নেতাদের নিয়ে সভা-সেমিনারে এ বিষয়ে বেশি-বেশি আলোকপাত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর শনিবার বিকালে গণভবনে হাঙ্গেরি সফরবিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, বিএনপি রাষ্ট্রপতিকে প্রস্তাব দিয়েছে, এ বিষয়টি তিনিই দেখবেন। যদিও এদিনই রাতে সাংবাদিকদের বিএনপির মহাসচিব জানান, রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ও একটি দলের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে বিএনপির প্রস্তাব এড়িয়ে গেলে চলবে না।
উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর দ্য ওয়েস্টিন, ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইসি গঠনে প্রস্তাব দেন খালেদা জিয়া। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আবদুর রকিব কমিশনের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় নতুন কমিশন গঠনে প্রস্তাব ছিল তার। প্রস্তাবে খালেদা জিয়া খালেদা জিয়া নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, কাদের নিয়ে গঠন হবে, বাছাই কমিটি, বাছাই কমিটির কাঠামো, নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণে দলের বিস্তারিত সুপারিশ তুলে ধরেন।
ওইদিন প্রস্তাবের পরই সন্ধ্যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের খালেদা জিয়ার প্রস্তাবকে অন্তঃসারশূন্য বলে মন্তব্য করেন। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এক সভায় বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রপতির কোনও ক্ষমতা নেই। এ কারণে ইসি গঠনে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপ করতে হবে। একই ধারাবাহিকতায় বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রস্তাব দেন।
নিজের প্রস্তাবের বিষয়ে খালেদা জিয়া এখনও অনড় অবস্থানে আছেন। সর্বশেষ টুইটারে করা দুটি টুইটে তিনি সমঝোতার ভিত্তিতে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।