বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেন।
এদিকে ডিবি পরিচয়ে অস্ত্রধারীরা তুলে নেওয়ার পর পাঁচ দিনেও হদিস মেলেনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদের।
রোববার আদালতে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো জানিয়েছে পাঁচ দিন ধরে খুঁজেও সালাহ উদ্দিন আহমেদের কোনো ‘সন্ধান পাওয়া যায়নি’।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এসবি, সিআইডি, র্যাব, ডিএমপি ও পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে পাঁচটি রিপোর্ট পেয়েছি। সবাই জানিয়েছে তারা সালাহ উদ্দিনের কোনো সন্ধান এখনও পায়নি।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদকে কেন আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য গত বৃহস্পতিবার সরকারের প্রতি রুল জারি করে হাইকোর্ট। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এ-সংক্রান্ত রুল দেন।
রোববারের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে সরকার আজ সকালে সালাহ উদ্দিন সম্পর্কে প্রতিবেদন দেয়। দুপুর আড়াইটায় এ বিষয়ে শুনানি হয়। এরপর তা আবার সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
গত মঙ্গলবার রাতে ডিবি পরিচয়ে একদল অস্ত্রধারী রাজধানীর উত্তরা এলাকার বাসা থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন।
সালাহ উদ্দিন আহমদের ‘নিখোঁজ’ হওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে পেশাজীবী মহাসমাবেশে বলেছেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। আমরা তাঁকে অ্যারেস্ট করার জন্য খুঁজছি। তিনি কোথায়, তার জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন। সালাহ উদ্দিন আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে বিবৃতি দিচ্ছিলেন। কিন্তু সবাই জানে, তিনি ওখান থেকেই (গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়) বিবৃতি দিয়েছেন। আট বস্তা ময়লার সঙ্গে তাঁকেও কোথাও পাচার করে দিয়েছেন কি না, সে জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন।’
এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমদকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। গতকাল দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘সরকারকে অনুরোধ করছি, সালাহ উদ্দিন আহমদকে অক্ষত অবস্থায় তাঁর পরিবারের কাছে ফেরত দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘মানুষের জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। সেই সরকার যদি ব্যর্থ হয়, সেই সরকার যদি বলে আমরা জানি না কে নিয়ে গেছে? তাদের ক্ষমতায় থাকার এক মুহূর্তও সুযোগ নেই।’
এ সময় সালাহ উদ্দিন আহমদের স্ত্রী হাসিনা আহমদ সেখানে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর নিখোঁজের খবরটি সরকারের কাছে স্পষ্ট নয়। সালাহ উদ্দিন যদি অন্যায় করেন, তা হলে তাঁকে আটক করা হোক, আদালতের সামনে ও বিচারের আওতায় আনা হোক। কিন্তু এভাবে নিখোঁজ করে দেওয়ার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’
সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে র্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তারা কোনো তথ্য দিতে পারেননি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ বা ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।