‘কক্সবাজারের গর্বের ধন’, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও দলটির নিখোঁজ মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমদকে অক্ষত ফিরে পেতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কক্সবাজার জেলা শাখা আবারও ৭ দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। একই সাথে তারা সালাহউদ্দিন আহমদকে অক্ষত অবস্থায় তাঁর পরিবারের কাছে ফেরত দেয়া অথবা আদালতে উপস্থাপন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জেলা সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল জানিয়েছেন, ৭ দিনের কর্মসূচির পরও সালাহউদ্দিন আহমদকে ফিরিয়ে দেয়া না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিয়ে তাঁকে জনতার মাঝে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করা হবে।
রাশেদুল হক রাসেল মনে করেন, ‘জনগণ বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী চাইলেই আইনশৃংখলা বাহিনী সালাহ উদ্দিন আহমদকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিতে পারেন।’
সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত ৭ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পহেলা এপ্রিল বুধবার কক্সবাজার জেলার প্রতিটি উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ, ২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জেলার আওতাধীন সকল শিক্ষা প্রতিষ্টানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ, ৩ এপ্রিল শুক্রবার বাদজুমা প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা ও কলেজের মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল, ৪ এপ্রিল শনিবার প্রতিটি পৌরসভায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ, ৫ ও ৬ এপ্রিল রোববার ও সোমবার সালাহউদ্দিন আহমদকে অক্ষত ও সুস্থ অবস্থায় ফেরত পাওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষ্যে জেলাজুড়ে গণসংযোগ এবং ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জেলা ছাত্রদলের ছাত্র-গণজমায়েত ও গণমিছিল।
লিখিত বক্তব্যে রাশেদুল হক রাসেল বলেন, ‘তিন তিনবার বিপুল ভোটে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এবং দলটির মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমদকে গত ১০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার উত্তরার একটি ভবন থেকে অস্ত্রের মুখে হাত ও চোখ বেঁধে আইনশৃংখলা বাহিনীর সাদাপোষাকধারি সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। সালাহউদ্দিন আহমদের পরিবার ও বিএনপির হাইকমান্ডও নিশ্চিত হয়েছেন, সালাহউদ্দিন আহমদকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাই তুলে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সেইদিন থেকে সালাহউদ্দিন আহমদ নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের সদস্য ও দলীয় হাইকমান্ডের কাছে নিশ্চিত তথ্য-উপাত্ত থাকার পরও আইনশৃংখলা বাহিনীর কোন শাখা তাঁকে আটক বা গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করছে না। যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়।’
রাসেল দাবি করেন, সালাহউদ্দিন আহমদ বিএনপির নিছক একজন নেতা নন। তিনি কক্সবাজারবাসির গর্বের ধন। তিনিই কক্সবাজারকে এগিয়ে নিয়েছেন জাতীয় নেতৃত্বে। সালাহউদ্দিন আহমদই কক্সবাজারকে উন্নয়নের শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই কারো না কারো স্বজন। স্বজন হারানোর বেদনা উপলব্ধি সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই অবগত। সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী, চার সন্তানের পাশাপাশি পুরো কক্সবাজারবাসি উদ্বিগ্ন ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন। এই দুঃসহ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’
রাশেদুল হক বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মিডিয়ায় উপহাসমূলক বক্তব্য রেখেছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।’
‘একটি স্বাধীন, স্বার্বভৌম দেশের সর্ববৃহৎ ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের মুখপাত্রকে রাতের আঁধারে আইন শৃংখলা বাহিনী কর্তৃক আটকের পর অস্বীকার করা গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে করেছে কলুষিত। যা দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেতও বটে’, মনে করেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন বলেন, ‘সালাহউদ্দিন আহমদকে ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে বাধা আসলেও আন্দোলন থেমে যাবে না। গ্রেপ্তার হলেও আন্দোলন চলবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘৭ দিনের কর্মসূচির পরও সালাহউদ্দিন আহমদকে প্রকাশ্যে ফেরত না দিলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এইচএসএসি পরীক্ষার কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত কলেজের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ক্যাম্পাসের বাইরে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার রোমন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুল ইসলাম শাহীন, সহ-সভাপতি আবদুর রউফ, যুগ্ম সম্পাদক আলাউদ্দিন রবিন, জাহিদুল ইসলাম রিটন, শহর ছাত্রদল আহবায়ক মোহাম্মমদ ইলিয়াছ, সিটি কলেজ আহবায়ক সাইফুর রহমান নয়ন, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শাখা আহবায়ক এইচ এম রায়হান উদ্দিন, শহর শাখা যুগ্ম আহবায়ক ফাহিমুর রহমান, সিটি কলেজ শাখা যুগ্ম আহবায়ক শামসুল আলম, শহর য্গ্মু আহবায়ক কানন বড়–য়া, আহমদ ছফা, কায়সার ফারুক, ছাত্রদল নেতা হারুনুর রশিদ, সাইদু সিকদার, নুরুল আবছার, রিজভী খান, মোহাম্মদ ওসমান প্রমূখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।