প্রতিবেশী মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযান ও কতিপয় রাখাইন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা অব্যাহত রয়েছে। তাদের হামলায় গুলিবিদ্ধ অনুপ্রবেশকারী এক রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশ সীমান্তে মারা গেছে। রোহিঙ্গাদের উপর হামলাযজ্ঞ অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থামানো যাচ্ছেনা। এই কারণে বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে নতুন করে গজিয়ে উঠছে রোহিঙ্গা ব¯িত।
জানা যায়-১৯ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টারদিকে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা বস্তির এ-ব্লকের ১০৬নং রোমে মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মন্ডু থানার মাংগালার মৃত ছৈয়দুল আমিনের পুত্র গুলিবিদ্ধ মোঃ শাহ আলম (৪৫) ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে সে মিয়ানমারে নিজগ্রামে ৪দিন বয়সের ছেলেসহ ২ছেলে,৬মেয়ে এবং স্ত্রী মাজুমাকে রেখে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে আসে বলে বোন রমিদা নিশ্চিত করেন। মৃত শাহ আলমের সঙ্গে আসা এক বোন ফাতেমা বেগম জানায় গত ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টারদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্বশস্ত্র রাখাইন সন্ত্রাসীরা মাংগালা গ্রামটি ঘিরে ফেলে। লোকজন ভয়ে বাড়ির ভেতরে প্রাণরক্ষার্থে লুকিয়ে থাকে। তাদের বেরিয়ে আসতে বললে ভয়ে কেউ আসেনি। যৌথবাহিনী সামনের দিকে অগ্রসর হলে প্রাণ রক্ষার্থে শাহ আলম জঙ্গলের দিকে পালাতে চাইলে তারা গুলিবর্ষন করে। এসময় একটি বুলেট শাহ আলমের বাম হাত ঘেঁষেই পাজরে বিদ্ধ হলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তারা দীর্ঘক্ষণ ঘিরে থাকায় চিকিৎসার জন্য কোথাও নিয়ে যেতে পারেনি। রাত গভীর হলে সেনাবাহিনী ও রাখাইন সন্ত্রাসীরা চলে গেলে শাহ আলমকে প্রাণে রক্ষার্থে একটি নৌকায় করে তারা ৪/৫জন দমদমিয়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে একটি সিএনজিযোগে লেদা এ-ব্লকের ১০৬নং রোমে বোন রমিদার বাড়িতে অবস্থান করে ডাক্তারের নিকট যাওয়ার প্রস্তুতিকালে মৃত্যুবরণ করেন। এই খবর নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিরা অবগত হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিত করে। সরকারের বিশ্বস্থ সুত্র গুলিবিদ্ধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা ব্যক্তির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এই মৃত্যু সংবাদ পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার এসআই মোঃ আব্দুল গোফরান বিকাল ৪টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যায়।
এদিকে চলতি বছরের গত ৯অক্টোবর হতে অদ্যবধি মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্বশস্ত্র কতিপয় রাখাইন সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হামলা এবং জ্বালাও-পোড়াওর কারণে বাংলাদেশের শাহপরীরদ্বীপ হতে উলুবনিয়া ছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্ট হতে নির্যাতিত-নিপীড়িত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ,শিশু অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় লোকালয় ও ভাড়াবাসায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বিভিন্ন স্থানে নতুন করে রোহিঙ্গা বস্তি গড়ে উঠতে দেখা গেছে। ###
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।