সুপ্রিম কোর্টে প্রতিনিয়ত মামলার সংখ্যা বাড়লেও অবকাঠমো আগের অবস্থানে রয়ে গেছে। তাই দেরিতে হলেও দাফতরিক কাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ২০তলাবিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ’ এর প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২০ সালের জুনে ৪৯ হাজার ৪৫০ বর্গমিটারের অত্যাধুনিক এ ভবনটির নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৩৩০ কোটি টাকা। তা যাচাই-বাচাই করতে সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী তাতে সম্মতিও দিয়েছেন। সব কাজ শেষ করে খুব শিগগিরই একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদফতর।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশন সূত্র মতে, বাংলাদেশে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার বিভাগ অন্যতম অঙ্গ। সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য যথাসময়ে বিচার নিষ্পত্তি করাও জরুরি। বিচার বিভাগ বিদ্যমান কাঠামো এবং স্পেস নিয়ে যথাযথভাবে তার ওপর অর্জিত দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। প্রতিনিয়ত মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি এর অন্যতম কারণ। অন্যদিকে সময়ের বাস্তবতার নিরিখে বিচার বিভাগের কাছে মানুষের প্রত্যাশাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু অফিস স্পেস বাড়ছে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচার বিভাগে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও অফিস স্পেসের সংস্থান করা জরুরি। তাই সব দিক বিবেচনা করে হাইকোর্ট ডিভিশনের অনুরোধে এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট পরিচালনার জন্য অফিস স্পেসের সংস্থান একান্ত দরকার। তাই দাফতরিক কাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ জন্য ঢাকা জেলার রমনায় দশমিক ৯৫ একর জমিতে ২০তলা ভিত্তির ওপর একটি ২০তলা ভবন করা হবে।
এতে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৭৫৩ বর্গফুট বা ৪৯ হাজার ৪৫০ বর্গমিটার অফিস স্পেসের সংস্থান করা হবে। ভবনে ৪০০ আসনের একটি কনফারেন্স রুম, ২টি ক্যাফেটেরিয়া, একটি সুইমিংপুল, একটি হেলিপ্যাডের সংস্থান থাকবে। এ ছাড়া ১৮২টি চেম্বার, লিগ্যাল এইড অফিস, মেডিকেল সেন্টার, ডে-কেয়ার সেন্টার, লাইব্রেরি ও জিমনেশিয়ামেরও ব্যবস্থা করা হবে। অত্যাধুনিক এ ভবনটিতে ২ লাখ গ্যালন ভূগর্ভস্থ জলাধারও নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া পানি সরবরাহ ও বিদ্যুতায়নসহ অন্যান্য কাজও করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, এ প্রকল্পটি চলতি (২০১৬-১৭) অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অন্তর্ভুক্তি না থাকলেও পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য সম্মতি দিয়েছেন। এরপরই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রক্রিয়াকরণ শুরু করেন। সম্প্রতি ৩৩০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি যাচাই-বাছাই করতে পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে কারো কোনো ওজর-আপত্তি দেখা যায়নি। তাই সব প্রক্রিয়া শেষ করে খুব শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। তাতে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা অনুমোদন দেবেন।
সূত্র:- মানবকন্ঠ
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।