মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি প্রত্যাহারকৃত টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী সহ ৭আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ
দিয়েছেন । টেকনাফ (আদালত নম্বর-৩) জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাং হেলাল উদ্দিন আসামীদের নিয়োজিত আইনজীবীদের জামিন আবেদন শুনানি করে আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
জেলা হাজতে পাঠানো আসামীরা হলেন, টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলী (৩১), এসআই নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এসআই টুটুল। করোনাকালীন হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪ জন করে ২ দফায় আসামীদের হাজত খানা থেকে কাঠগড়ায় আনা হয়।
আসামিদের পক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া বাদী পক্ষে এডভোকেট রাখাল চন্দ্র মিত্র জামিন আবেদন শুনানি করেন। রাষ্ট্র পক্ষে কোর্ট ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমার দাশ।
তারা গত ২আগস্ট থেকে পুলিশ লাইনে ছিলো। গত ৩১ আগস্ট মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ নিহত হওয়ার পরদিন এ ৮ জন সহ ২১ জনকে পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়।
অপরদিকে, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি ও মামলার ২ নম্বর আসামী প্রদীপ কুমার দাশকে চট্রগ্রাম পুলিশ হেফাজতে রেখে কক্সবাজার আদালতে সারেন্ডার করার জন্য আনা হয়েছে।
মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলাটি টেকনাফের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেের আদালতের আদেশ মতে, টেকনাফ মডেল থানায় নিয়মিত একটি হত্যা মামলা হিসাবে ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রুজু করা হয়। যার নম্বর টেকনাফ থানা : ৯/২০২০, যাহার সিআর মামলা নম্বর : ৯৪/২০২০ ইংরেজি (টেকনাফ)। দন্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি রুজু করার সাথে সাথে মামলার এজাহারভুক্ত সকল আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়ে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া আসামিদের মধ্য থেকে মামলার ২নম্বর আসামী-টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ (৪৮) চট্টগ্রাম পুলিশের হেফাজতে থেকে কক্সবাজারে সারেন্ডার করতে আসছেন। প্রদীপ কুমার দাশ গত ৪ আগস্ট থেকে অসুস্থ হয়ে ছুটিতে যান। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি তখন থেকে বন্ধ ছিলো।
এদিকে, আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় রুজু হওয়া মামলাটি তদন্তের জন্য র্যাব-১৫ এর কাছে বৃহস্পতিবার ৬ আগস্ট সকালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি এবিএমএস দোহা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী টেকনাফ মডেল থানা কর্তৃপক্ষ এ মামলার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। অপরদিকে, র্যাব-১৫ থেকে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে মামলার সার্বিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই খুন হওয়া মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানের বড়বোন ও মোঃ শামসুজ্জামানের সহধর্মিণী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস (৪২) বাদী হয়ে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী সহ ৮ জনকে আসামী করে টেকনাফ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৫ আগস্ট সকালে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানের সঙ্গী ও ৩১ জুলাই এর ঘটনায় টেকনাফ পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামি সাহেদুল ইসলাম সিফাত সহ ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।