কক্সবাজার উপকূল দিয়ে সাগরপথে অবৈধভাবে মানব পাচারে ৭৯ জন গডফাদারের তালিকা প্রণয়ন করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এই ৭৯ জন নামের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।স্বারষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তালিকায় এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে খোদ কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের আওয়ামীলীগের দলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদি, টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও এমপি বদির ভাই মৌলভী মুজিবুর রহমান ও টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের নাম শীর্ষে আছে। এই তালিকায় স্থান পাওয়া সকলের বাড়ি কক্সবাজার জেলায়। টেকনাফ ও উখিয়া এলাকায় এদের আধিপত্য রয়েছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার-পাঁচ বছর আগেও কক্সবাজার জেলার লোকজন পাচারকারীদের ২০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে অক্টোবর-ফেব্রুয়ারি মাসে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যেত।যাত্রাপথে ট্রলারসহ যেসব যাত্রী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে ধরা পড়ত তাদের মধ্যে ৭০-৮০ শতাংশ যাত্রীই মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকৃত রোহিঙ্গা।তখন মালয়েশিয়ায় সমুদ্রপথে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো ফিশিং ট্রলার।এসব ট্রলার ছিল খুবই নিম্নমানের এবং ট্রলারগুলো মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর ভেঙে ফেলা হতো। গত এক থেকে দেড় বছর ধরে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের কার্গো ট্রলার।মানবপাচারের বিষয়ে গেল মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক বিশেষ প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।ওই প্রতিবেদনে মানব পাচারকারী গডফাদারদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশের আইজি’র কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়ে পাঠিয়েছে তারা।
এদিকে গত শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়া উপকুলের সোনারপাড়া বাজারে অনুষ্ঠিত মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সভায় বক্তারা বলেন, উপকুলের ৮০ শতাংশ পরিবারের কেউ না কেউ সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাচার হয়েছে। এসব পাচারের পেছনে রয়েছে স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ মোড়ল শ্রেণির গুটি কয়েক পেশাদার দুর্বৃত্ত। তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের খেসারত দিতে গিয়ে শত শত স্বজনহারা পরিবারের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। তাই এ সমস্ত পাচারকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে মানব পাচারকারীদের সমাজচ্যুত করার দাবী জানানো হয়েছে।
মানবপাচারকারী গডফাদার যারা:
টেকনাফ এলাকার মানবপাচারকারী গডফাদারের সংখ্যা ৩১ জন। তালিকায় গডফাদারদের মধ্যে রয়েছে- আবদুর রহমান বদি (৪৩), পিতা-মৃত এজাহার মিয়া কো¤পানি, সাং-চৌধুরীপাড়া, পো:+থানা: টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; জাফর আহমদ (৫১), পিতা-মৃত সুলতান আহমদ, সাং-উত্তর লেঙগুর বিল, পো:+থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মৌলভী মুজিবুর রহমান (৩২), পিতা-মৃত এজাহার কো¤পানি, সাং-জালিয়াপাড়া, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. ধলু হোসেন (৫৫), পিতা-মৃত সুলতান আহমদ, সাং-বাজারপাড়া, শাহ্পরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. ইউনুছ (৪০), পিতা-মৃত সুলতান আহমদ, সাং-বাজারপাড়া, শাহ্পরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. ইসমাইল (৩৫), পিতা-ছালে আহমদ, সাং-বাজারপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; ফিরোজ আহমদ, পিতা-মৃত আবু শামা ওরফে বাডু হাজী, সাং-ডাঙ্গরপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; দেলোয়ার (৩৮), পিতা-মৃত আবদুল মোতালেব, সাং-ডাঙ্গরপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. সাহাব মিয়া, পিতা-মৃত সুলতান আহমদ, সাং-মাঝেরপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. শরীফ হোসেন (৪০), পিতা-মৃত জালাল আহমদ, সাং-মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; শরীফ হোসেন ভুলু (৪৫), পিতা-মৃত মো. হোসেন, সাং মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; সাহেদুর রহমান নিপু, পিতা-আবদুর রহমান ওরফে অসি আবদুর রহমান, সাং-পুরানপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; হামিদ হোসেন (৪০), পিতা-মৃত হাজী আবদুল করিম, সাং-বাজারপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; জহির উদ্দিন ওরফে কানা জহির (৬০), পিতা-মৃত হোসেন আলী সিকদার, সাং-মুন্ডারডেইল, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মৌলভী আজিজ, পিতা-মৌলভী নাছির উদ্দিন, সাং-পুরানপাড়া, শামলাপুর, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; নূর হাকিম মাঝি (৫৫), পিতা-মৃত গণি মিয়া, সাং-দক্ষিণপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; নূর মোহাম্মদ মেম্বার, পিতা-নজু মিয়া, সাং-নয়াপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; মৌলভী বশির ওরফে ভাইলা, পিতা-মৃত সুলতান আহমদ, সাং-কন্ডুবুনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; নজির আহমদ ওরফে নজির ডাকাত, পিতা-আবদুর রহিম, সাং-কচুবুনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; আবদুল হামিদ (৪০), পিতা-আবদুল খালেক, সাং-কচুবুনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; গুরা মিয়া (৩২), পিতা-মৃত মোছাব্বর আহমদ, সাং-কচুবুনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; মো. কাসেম ওরফে জিমা কাসেম (৫৫), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-কচুবুনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; মো. ইসলাম ওরফে বাগু (৩২), পিতা- ফজল আহমদ, সাং-কচুবুনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; জাফর আলম (৩৫), পিতা-ফজল আহমদ, সাং-কচুবুনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; আক্তার কামাল (৩৫), পিতা-নজির আহমদ মেম্বার, সাং-আলীরডেইল, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; শাহেদ কামাল (৩০), পিতা-নজির আহমদ মেম্বার, সাং-আলীরডেইল, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার; আবদুর গফুর (৪০), পিতা-আলু ফকির, সাং-হাদুরছড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ,জেলা- কক্সবাজার; হেবজ রহমান ওরফে হেবজ মাঝি (৪২) রোহিঙ্গা, পিতা-অজ্ঞাত, সাং-খানকারডেইল, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. নুরুল হুদা, পিতা-মৃত আবুল কাসেম, সাং-পশ্চিম লেদা, হ্নীলা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. নুরুল কবির, পিতা-মৃত আবুল কাসেম, সাং-পশ্চিম লেদা, হ্নীলা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আমান উল্লাহ ওরফে আনু, পিতা-মো. শফি (এম,আর,সি নং-৪৯০৭২, রুম নং-১, শেড নং-৬৯১, ব্লক-এইচ), নয়াপাড়া নিবন্ধিত শরণার্থী শিবির।
টেকনাফ এলাকার মানবপাচারকারীদের গডফাদার যারা:
টেকনাফ এলাকার মানবপাচারকারীদের গডফাদার ও দালাল সংখ্যা ৪৮ জন। এ তালিকায় রয়েছে- বেলাল উদ্দিন (২২), পিতা-মো. ধলু হোসেন, সাং-বাজারপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; নূর হোসেন (৩২), পিতা-মৃত জালাল আহমদ, সাং-মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; নুরুল আলম, পিতা-নজির আহমদ, সাং-মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; এনায়েত উল্লাহ, পিতা-হাজী আলী হোসেন, সাং-মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. সেলিম, পিতা-মৃত হোসেন, সাং-মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. হোসেন, পিতা-দলিল মিয়া, সাং-মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; জাফর আহমদ, পিতা-জোর আহমদ, সাং-মিস্ত্রিপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. শফিক, পিতা-মাহমুদুল্লাহ মাঝি, সাং-দক্ষিণপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আবু তাহের, পিতা-আবুল কাসেম মিয়া, সাং-দক্ষিণপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. জাফর, পিতা-মৃত নূর আহমদ, সাং-দক্ষিণপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আলী মাঝি, পিতা-অজ্ঞাত, সাং-দক্ষিণপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; সামসুল আলম, পিতা-মৃত কবির হোসেন, সাং-গোপাপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. সাব্বির আহমদ, পিতা-মৃত আব্দুল লতিফ, সাং-মাঝেরপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. কামাল হোসেন, পিতা-কাল মিয়া, সাং-সাঁঝেরপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. হাসান, পিতা-ফয়জুর রহমান, সাং-কোনারপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. কবির হোসেন, পিতা-শফি মিয়া, সাং-পশ্চিমপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. কবির হোসেন, পিতা-নূর আহমদ, সাং-হারিয়াখালী, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; সাদ্দাম (৪৫), পিতা-নূর আহমদ, সাং-হারিয়াগালী, পো: সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আবুল কালাম, পিতা-গুরা মিয়া, সাং-হারিয়াখালী, পো: সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. শরীফ, পিতা-লাল মিয়া, সাং-নয়াপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. লিটন, পিতা-আবদুল্লাহ, সাং-নয়াপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. আবুল হাসেম, পিতা-মো. জালাল, সাং-নয়াপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. দলিল আহমদ, পিতা-মো. হোসেন, সাং-নয়াপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; সিদ্দিক আহমদ, পিতা-ইউসুফ আলী, সাং-কাটাবনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; ফয়েজ, পিতা-আজিজুর রহমান, সাং-কাটাবনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; নুরুল ইসলাম ওরফে কালা পুতু, পিতা-মৃত মকবুল আহমদ, সাং-কাটাবনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; জাহাঙ্গীর, পিতা-আব্দুল মাজেদ, সাং-কাটাবনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মীর আহমদ, পিতা-অজ্ঞাত, সাং-কাটাবনিয়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. শাকের মাঝি (৩০), পিতা-কবির আহমদ, সাং-মুন্ডারডেইল, পো: সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; নুরু মাঝি (৪০), পিতা-নাজু মিয়া, সাং-মুন্ডারডেইল, পো: সাবরাং, থানা-টেকনাফ, কক্সবাজার; হাফেজ মোক্তার, পিতা-মৌলভী আবদুল গফুর, সাং-পুরানপাড়া, সাবরাং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. সৈয়দ আলম, পিতা-মৃত দুদু মিয়া, সাং-জালিয়াপাড়া, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আব্দুর রহিম, পিতা-মঈনুজ্জামান, সাং-কচুবুনিয়া, সদর, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আলী আহমদ ওরফে আলী বলি, পিতা-অজ্ঞাত, সাং-মিঠাপনির ছড়া, সদর, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; নুরুল ইসলাম মাঝি, পিতা-মৃত গোলাল আহমদ, সাং-মিঠাপনির ছড়া, সদর, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আইয়ুব আলী মাঝি, পিতা-মৃত আশরাফ আলী, সাং-ধুমপ্রাং বিল, টেকনাফ সদর, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আল মাসুদ, পিতা-মফিজুর আলম, সাং-বাজারপাড়া, হ্নীলা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; জাহাঙ্গীর, পিতা-রবিউল হোসেন ওরফে আনসার, সাং-বাজারপাড়া, হ্নীলা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; সোহাগ আবদুল্লাহ, পিতা-আবদুর রহিম, সাং-পশ্চিম লেদা, হ্নীলা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; কবির ওরফে ডা. কবির (৫০), পিতা-অজ্ঞাত, ব্লক-এ, লেদা অনিবন্ধিত শরণার্থী শিবির, হ্নীলা, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. আলম ওরফে মাত আলম, পিতা-মৃত আমির হামজা (এমআরসি নং-৫৪৩৯৪, রুম নং-৫, ৬, শেড নং-৯৭২, ব্লক-ই), নয়াপাড়া নিবন্ধিত শরণার্থী শিবির; এনায়েত উল্লাহ, পিতা-হাফেজ আবদুর রহমান, সাং-উনছিপ্রাং, হোয়াইক্যং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; মো. শামসুল আলম, পিতা-আব্দুর রশীদ, সাং-উনছিপ্রাং, হোয়াইক্যং, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার; আবদুস সালাম ওরফে আবদু কো¤পানি, পিতা-রশীদ আহমদ, সাং-নয়াপাড়া, শামলাপুর, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার ও আজিজুল ইসলাম ওরফে পুতুইয়া, পিতা-রশীদ আহমদ, সাং-নয়াপাড়া, শামলাপুর, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজারসহ আরও তিন জন।
মানবপাচার বন্ধ না হওয়ার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবপাচারকারী গডফাদারদের শনাক্তপূর্বক আইনের আওতায় না আনা এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের আটক করে শাস্তি নিশ্চিত না করার কারণে মানবপাচার বন্ধ হচ্ছে না।
বর্তমানে কক্সবাজার, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, পঞ্চগড়, যশোর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, জয়পুরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, ভোলা ও ঝিনাইদহ জেলা থেকে সারা বছর মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের জন্য কক্সবাজারের টেকনাফ,উখিয়া ও মহেশখালীতে পাচারকারী চক্র সংশ্লিষ্ট জেলার স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কমিশনের ভিত্তিতে লোক সংগ্রহ করে কক্সবাজারে পাঠায়।এ পাচারকারী চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর দেয়া হয়। তারা ওই এলাকার দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মালয়েশিয়ার পথে রওনা হয়। পাচারের রুট হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের ঘোলাপাড়া, পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণপাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের কচুবুনিয়া, কাটাবুনিয়া, খুরেরমুখ, মুন্ডারডেইল, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়া পাড়া, লম্বরী, হাবিরছড়া, বাহারছড়া ইউনিয়নের বড় ডেইল ও শামলাপুর মানবপাচারের নিরাপদ রুট। এছাড়া উখিয়া এলাকার ইনানীর রেজু খাল ব্রিজ, কক্সবাজার সদরের সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া, নুনিয়ারছড়া ঘাট, খুরুশকুল ব্রিজ এবং মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা ঘাট দিয়ে মানবপাচার হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,সীমান্ত এলাকা দিয়ে মানবপাচারে বিজিবি ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। দালালরা বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর অসাধু সদস্যদের উৎকোচের বিনিময়ে মানবপাচার করে থাকে। এভাবে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক লোক সমুদ্র পথে ট্রলারে করে অবৈধভাবে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে এবং প্রতারিত ও নির্যাতিত হয়ে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণন্ন হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো মাঝে-মধ্যে অভিযান চালিয়ে কিছু দালালকে আটক করলেও পাচারকারী চক্রের মূলহোতা বা গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এসব গডফাদারদের প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ তথ্য প্রমাণের অভাবে তারা ছাড়া পেয়ে যায়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অপকর্ম ঢাকতে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় মাঝে-মধ্যে নিরীহ পাচারকারীদের আটক করে থাকে।
প্রতিবেদনে মানব পাচার বন্ধে ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে। অসাধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, পাচারকারী গডফাদার, আটককৃতদের জামিন অযোগ্য ধারায় বিচারের ব্যবস্থাসহ নানা সুপারিশ করা হয়েছে।এছাড়া গডফাদারদের প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে না। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ তথ্য-প্রমাণের অভাবে তারা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৮ মে ভোররাতে টেকনাফের বিচ হ্যাচারী এলাকায় মানব পাচারের প্রস্তুতিকালে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শাহপরীরদ্বীপ বাজার পাড়ার সোলতান আহমদের পুত্র ধলু হোসেন প্রকাশ ধলু মাঝি (৫৫), কাটাবনিয়ার আব্দুল মাজেদ মিয়ার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৩০) ও হারিয়াখালীর কবির আহমদের পুত্র জাফর আলম (২৫) নিহত হয়। এ সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে দেশীয় তৈরি ২টি এলজি, ৩ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১০ রাউন্ড কার্তুজের খোসা উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আতাউর রহমান খন্দকার।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।