সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে অবিলম্বে গ্রিক দেবি ‘থেমিস’-এর মুর্তি অপসারণের দাবিতে শুক্রবার (১০ মার্চ) বাদ জুমা দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায় দুপুরে হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এক জরুরি বৈঠকে এই কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।
এছাড়া হেফাজত আমির দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশব্যাপী হেফাজতের জেলা কমিটির নেতাকর্মীদেরকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ ও দেশের ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির বিগত চার বছর আগে গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙার অভিযোগে ও শাপলা চত্বরের ঘটনার পর থেকে দায়েরকৃত ষড়যন্ত্রমূলক সকল মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা অখ্যায়িত করে এই মামলায় আকস্মিকভাবে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বুধবার সন্ধ্যায় হেফাজত আমিরের প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহমদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে হেফাজত আমির বলেন, মুসলমানদের ঈমানি চেতনাবোধ ধ্বংস ও নাগরিক অধিকার হরণ করে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক লুটপাটের জন্য দেশী-বিদেশী চক্র গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আধিপত্যবাদি চক্র শুধুই শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় চেতনা ধ্বংসের লক্ষ্যেই যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তা নয়, বরং তারা ইসলামী নেতৃত্বের কণ্ঠরোধ করার জন্যও ওঠেপড়ে লেগেছে।
সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে হেফাজত আমির আরো বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও কোটি কোটি মুসলমানের ধর্মীয় বিশ্বাসকে সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে গ্রিক মূর্তি অপসারণ করুন।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে কোন ভাস্কর্য স্থাপন করতে চাইলে পবিত্র কুরআনের অথবা পূর্ব থেকে বিদ্যমান থাকা দাঁড়িপাল্লাকে আরো শৈল্পিকভাবে স্থাপন করা যায় কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা করুন। কিন্তু দেশবাসীর উপর গ্রিক দেবিকে চাপিয়ে দিতে চাইলে সেটা বাংলাদেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।
বিবৃতিতে হেফাজত আমির বলেন, নানাভাবে হয়রানি, গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কখনো সত্য, ন্যায় আদর্শিক নেতৃত্ব ও কণ্ঠকে স্তব্ধ করা যাবে না। অন্যায় ও জুলুম-অত্যাচার বন্ধ এবং স্বাধীনতা ও ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য উলামায়ে কেরামের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস সেই বৃটিশ শাসনের সূচনা থেকেই রয়েছে।
আল্লামা শফী বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানদের ঈমানি চেতনাবোধ মুছে ফেলতে নানা পর্যায়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এর পাশাপাশি এখন বাংলাদেশের মুসলিম পরিচিতি ও নিদর্শন সমূহকেও মুছে ফেলার অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। আমাদের কর্মসূচি কোন রাজনৈতিক স্বার্থে বা জাগতিক উদ্দেশ্যে নয়। এটা বাংলাদেশের মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদা ও মুসলিম পরিচিতি রক্ষার আন্দোলন। গ্রিক দেবির মূর্তি অপসারণের আগে পর্যন্ত সকল মুসলমানকে সোচ্চার থাকতে হবে।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মাওলানা লোকমান হাকিম, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহি, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানী, আমিরের প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহমদ, আমিরের একান্ত সচিব মাওলানা শফিউল আলম, মাওলানা হাফেজ মুজ্জাম্মেল, মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদরিস ও মাওলানা আনম আহমদ উল্লাহ প্রমুখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।