কক্সবাজারের উখিয়ার সর্বত্রে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের সর্বত্র ডায়রিয়া রোগীর ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। প্রচন্ড তাপদাহ কারণের ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীর অনুপাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ঔষুধ সরবরাহ দিতে পারছে না বলে চিকিৎসা নিতে আসা ভূক্তভোগীরা। ফলে অসহায় দরিদ্র রোগীদের সরকারী ঔষুধ সংকটের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শুক্রবার ও শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুরুষ, মহিলা ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ডায়রিয়া আক্রান্ত নারী-শিশু ও বৃদ্ধ রোগীদের অর্বণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। ১৪ মে সকালে উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পাতাবাড়ি গ্রামের বেলাল আহমদের দেড় বছরের শিশু ওয়াহিদকে গুরুতর ডায়রিয়া অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল পর্যন্ত উক্ত শিশু রোগী তেমন কোন উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি বলে শিশুর অভিভাবকরা জানিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে কিছু খাওয়ার স্যালাইন দেওয়া হলেও অন্যান্য যাবতীয় ঔষুধ, স্যালাইন ও সুই গজ সব কিছু বাইর থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতালে বেডে জায়গা না পেয়ে বারান্দার ফ্লুরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে। এভাবে অন্তত ৪০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী উখিয়া হাসপাতালের বেডে বিনা ঔষুধে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত সেবিকা বালি শীল বলেন, রোগী ও রোগ অনুপাতে যে পরিমানের ঔষুধ সরবরাহ দেওয়ার কথা তা নেই। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের প্রায়ই ঔষুধ নিজেদের খরচে বাইর থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। তিনি জানান, চলতি মাসে গতকাল পর্যন্ত ১৭২ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত ২ দিন পূর্বে রাজাপালং ইউনিয়নের দরগাহ বিল গ্রামের মকবুল আহমদ (৬৫) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়।
এছাড়াও উখিয়ার বিভিন্ন ঔষুধের দোকান সংলগ্ন ক্লিনিক গুলোতে প্রতিদিন অসংখ্য ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে বলে উখিয়া গ্রাম ডাক্তার সমিতির সভাপতি আব্দুল জব্বার জানান। উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ডাঃ রবিউল রহমান রবি রোগী অনুপাতে ঔষুধ সরবরাহে সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, একাধিক ডাক্তার মৌসুমী ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সার্বক্ষনিক চেষ্টা চালাচ্ছে। উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাক্তার ফিরোজ খান বলেন, বর্তমান মৌসুমগত কারণে সর্বত্র ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঔষুধ সংকটের কথা স্বীকার না করলেও ঔষুধ আনতে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসে জরুরী ভিত্তিতে লোক পাঠানো হয়েছে। বর্তমান মৌসুমে পানি শুণ্যতার কবলে পড়ে লোকজন বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা অসচেতন ভাবে যত্রতত্র খোলা পানি, খোলা খাবার ও ফলমূল খাওয়ার কারণে নানা জীবাণুর প্রভাবে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোন ডায়রিয়া রোগীর মৃত্যু ঘটেনি বলে তিনি দাবী করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।