হত্যা, নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহ ও দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা ২১ মামলায় ২০১৬ সালে মোট ৮ দিন আদালতে হাজিরা দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শুধুমাত্র জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ৬ দিন বিশেষ আদালতে হাজির দেন তিনি। আর বাকি ১৯ মামলায় দুই দিন নিম্ন আদালতে হাজির দেন খালেদা।
দুর্নীতির দুই মামলায় আদালতে ৬ দিন : ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদ্দারের আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি দুই মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে। যে ৬ তারিখে আদালতে হাজির হয়েছেন খালেদা। সেগুলো- ২ জুন, ১৭ এপ্রিল, ১০ নভেম্বর, ১ ডিসেম্বর, ৮ ডিসেম্বর ও ২২ ডিসেম্বর।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলা তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদাসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অপর মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
১০ মামলায় জামিন পান খালেদা
২০১৬ সালের ১০ আগস্ট রাজধানীর দারুস সালাম থানায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা ৯টি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের একটিসহ মোট ১০ মামলায় ঢাকা নিম্ন আদালতে হাজির হন খালেদা। ১০ মামলায় আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। এছাড়া আরও ২ মামলায় হাজিরা দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এদিন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে তিনি দারুস সালাম থানার নাশকতার ৮ মামলা এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা অপর একটি মামলায় জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুন নাহার ইয়াসমিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে একই থানার অপর একটি নাশকতার মামলায় জামিন আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এদিন মোট ১০ মামলায় জামিন পান বিএনপি চেয়ারপারসন। অপরদিকে নাইকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দেন তিনি।
পাঁচ মামলায় খালেদার জামিন
২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলা, বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, গুলশান থানার মামলা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মোট পাঁচ মামলায় খালেদা জিয়া আইনজীবীর মাধ্যমে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।